'স্মার্ট বাংলাদেশ বিপজ্জনক শব্দ, কারণ এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন'
'স্মার্ট বাংলাদেশ বিপজ্জনক শব্দ, কারণ এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন'
নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির দাবি করেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ একটি বিপজ্জনক শব্দ, কারণ এটি এক ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন। কারণ তাতে একজন নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের প্রতিটি দিকের অ্যাক্সেস সমস্ত সরকারী সংস্থার কাছে চলে যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য সেক্টরের মতো ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় আইনের প্রয়োগ নেই। তিনি মন্তব্য করেন যে, কোন দল ক্ষমতায় আছে তাতে কোনো কিছু যায় আসে না, কারণ সকল দলই ক্রমাগত জনগণকে শাসন করার চেষ্টা করে। তবুও, সাংবাদিক হিসাবে আমাদের পেশাকে সমুন্নত রাখা এবং নিরপেক্ষ থাকা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
বাংলাদেশে বিভ্রান্তিমুলক তথ্য, মিথ্যা খবর ও গুজব সংক্রান্ত বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করার লক্ষ্যে গতকাল (২১ মার্চ, ২০২৩) মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহযোগিতায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) ঢাকায় “কনফ্রন্টিং মিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক একটি সংলাপে নুরুল কবির এমন বক্তব্য রাখেন। ওই সংলাপে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং পত্রিকাগুলোর সিনিয়র সম্পাদক ও সাংবাদিক, ফ্যাক্ট-চেকার এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা অংশগ্রহণ করেন। উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে, সিজিএস এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন যে, এটি নির্বাচনী বছর হওয়ায়, প্রচুর পরিমাণে গুজব ও ভুল তথ্য ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, যে রাজনীতিকরণের কারণে মূলধারার মিডিয়া জনগণের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে।
আলোচনায় উপস্থিত বক্তারা এবং অংশগ্রহণকারীরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেন যা সাংবাদিক এবং জনসাধারণকে সঠিক সংবাদ প্রকাশে বাধা দিচ্ছে। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভুল প্রয়োগ, সংবাদমাধ্যমগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা, সাংবাদিকদের উপর দ্রুত সংবাদ পরিবেশনের চাপ, সাংবাদিকদের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা ইত্যাদি। মার্কিন দূতাবাসের যোগাযোগ পরামর্শদাতা মাহবুবুর রহমানের মতে এই ধরনের উপস্থাপনা বেশি বেশি হওয়া উচিত। এতে মিথ্যা তথ্যের প্রচার দ্রুত কমবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এজেন্সি ফ্রান্স প্রেস (এএফপি)’র ফ্যাক্ট চেক এডিটর কদরুদ্দীন শিশির বলেন, মানুষ বিভিন্নভাবে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করে, কখনো সচেতনভাবে এবং কখনওবা অচেতনভাবে, যা ভুল তথ্য ছড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই খবরে রিপোর্ট করার সময় আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তিনি ভুয়া খবর কমানোর জন্য সাংবাদিকদের দায়বদ্ধ হওয়ার কথা বলেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অস্পষ্ট ও ভুল তথ্য প্রচারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। সিজিএস এর চেয়ারম্যান ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, মিথ্যা তথ্য সামাজিক ঘটনাবলীতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। যারা এই সমস্যার মধ্য দিয়ে গিয়েছেন, তারা এটি বুঝতে পারবেন। তিনি সিএনএনকে একটি দৃষ্টান্ত হিসাবে ব্যবহার করে বলেন যে, যে ভুল তথ্য একটি বাবার আত্মহত্যার চেয়ে অনেক বেশি দুঃখজনক। সংলাপের শেষ পর্বে গণমাধ্যমকর্মীরা একটি জরিপে অংশগ্রহণ করেন এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংবাদ মাধ্যমে ভুল ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন রোধে কার্যকরি ব্যবস্থার বিভিন্ন উপায় তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, “কনফ্রন্টিং মিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ” সিজিএস’র উক্ত বিষয়ের উপর ধারাবাহিক কার্যক্রমের সপ্তম আয়োজন এবং এর পরে ঢাকায় ও ঢাকার বাইরে এমন আলোচনা ও প্রশিক্ষণ আয়োজিত হবে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
News Courtesy: