ফেক নিউজ রোধে গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে সংলাপ
ফেক নিউজ রোধে গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে সংলাপ
বাংলাদেশে বিভ্রান্তিমুলক তথ্য, মিথ্যা খবর ও গুজব সংক্রান্ত বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করার লক্ষ্যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহযোগিতায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) সিলেটে “কনফ্রন্টিং মিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক এ সংলাপ আয়োজন করে।
সংলাপে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং স্থানীয় পত্রিকাগুলোর সিনিয়র সম্পাদক ও সাংবাদিক, ফ্যাক্ট-চেকার এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা অংশগ্রহণ করেন।
উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে, দেশে সাংবাদিকতার বিভিন্ন সমস্যার বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে এবং এর ফলে বিভ্রান্তিমুলক তথ্য, মিথ্যা খবর ও গুজব ছড়িয়ে পড়ার দিকটিও আলোচনা করা হয়। আলোচিত সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে তথ্য সংগ্রহে বাধা দেয়া বা তথ্য না দেয়া, সরকারের স্বদিচ্ছার অভাব ও ভুল তথ্য প্রদান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভয়, রিপোর্টারদের নিয়মিত কাজের চাপ ও তার ফলে মানসম্পন্ন সংবাদের ঘাটতি, পর্যাপ্ত রিসোর্সের অভাব, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মালিকানাধীন মিডিয়া হাউজ ও তাদের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন ইত্যাদি। এছাড়াও সংবাদ মাধ্যমে নির্ভুল তথ্য যাচাইয়ের জন্য ফ্যাক্ট-চেকারদের সাথে সমন্বয় ও কিভাবে তথ্য যাচাই করা যায় সে সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়।
আলোচনায় চ্যানেল আই’র প্রধান বার্তা সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান বলেন, “ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে সত্য খবরের পাশাপাশি ভুয়া খবর বিদ্যমান ছিল কিন্তু ইন্টারনেট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভুয়া খবর প্রচারে বৃহত্তর মাত্রা যোগ করেছে। ক্রস চেকিং সংবাদ প্রতিবেদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির মধ্যে একটি এবং সংবাদের সত্যতা যাচাই ছাড়াই তা প্রকাশ করা সাংবাদিকতার মান নির্দেশ করে।’’
তিনি আরও বলেন, “সত্য অথবা মিথ্যা তথ্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একটি নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। সাংবাদিকদের এখন আর বিভিন্ন সূত্র বা গুজব বা কর্তৃপক্ষের দ্বারা আরোপিত সংবাদের উপর নির্ভর করা উচিৎ নয়। সরেজমিনে তথ্য যাচাই ছাড়া সঠিক সংবাদ উৎসের কোনো বিকল্প নেই।’’
পরবর্তীতে আল-আজাদ, সিনিয়র সাংবাদিক, সিলেট বলেন, “সংবাদ পরিবেশনের সময় একজন সাংবাদিককে অবশ্যই নিরপেক্ষতার অনুশীলন করতে হবে। রিপোর্ট করার সময় কোন রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা থাকা উচিত নয় তবে একজন সাংবাদিক এর অবশ্যই রাজনৈতিক আদর্শ থাকতে হবে।’’
এছাড়াও প্রকাশিত খবরসমূহের মধ্যে অমিলের পুনরাবৃত্তির বিষয়টির ওপর জোর দেন তিনি। তিনি বলেন, “দ্রুত সংবাদ প্রকাশ চর্চা এবং সাংবাদিকদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা ভুল তথ্য ছড়ানোর অন্যতম দুইটি কারণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।“ তিনি আরও বলেন “এ ধরণের চর্চা সাংবাদিকদের তাদের প্রতিষ্ঠিত শক্তিশালী জায়গা থেকে দিনদিন দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।’’
সংলাপের শেষ পর্বে গণমাধ্যমকর্মীরা একটি জরিপে অংশগ্রহণ করেন এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংবাদ মাধ্যমে ভুল ও বিভ্রান্তমূলক তথ্য উপস্থাপন রোধে কার্যকরি ব্যবস্থার বিভিন্ন উপায় তুলে ধরেন।
“কনফ্রন্টিং মিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ” সিজিএস’র উক্ত বিষয়ের উপর ধারাবাহিক কার্যক্রমের চতুর্থ আয়োজন এবং এর পরে ঢাকায় ও ঢাকার বাইরে এমন আলোচনা ও প্রশিক্ষণ আয়োজিত হবে। সংলাপের সঞ্চালনা করেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
News Courtesy: